জ্বর হল শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে যাওয়া, যা সাধারণত সংক্রমণ বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ। জ্বরের কারণগুলো নানা রকম হতে পারে এবং তা নির্ভর করে ভৌগলিক স্থান, ঋতু, বয়স ও স্বাস্থ্যের ওপর। নিচে জ্বরের কিছু প্রধান কারণ আলোচনা করা হলো:
সংক্রমণ
বাইরে থেকে আসা সংক্রমণ: জীবাণু, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, বা পরজীবী দ্বারা সংক্রমণ জ্বরের অন্যতম প্রধান কারণ।
যেমন:
ভাইরাল সংক্রমণ: সাধারণ সর্দি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ইত্যাদি।
ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ: গলা ব্যথা, নিউমোনিয়া, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI) ইত্যাদি।
পরজীবী সংক্রমণ: ম্যালেরিয়া, আমাশা ইত্যাদি।
শারীরিক সংক্রমণ: কখনো কখনো শরীরের ভিতরে কিছু বিশেষ সংক্রমণের কারণে জ্বর হতে পারে।
যেমন:
এন্ডোকার্ডাইটিস: হৃদপিণ্ডের অভ্যন্তরীণ পর্দার সংক্রমণ।
টিস্যু সংক্রমণ: হাড়, অস্থি, বা মাংসপেশির সংক্রমণ।
অটোইমিউন ডিসঅর্ডার
অটোইমিউন ডিসঅর্ডারে শরীরের ইমিউন সিস্টেম নিজেই শরীরের কোষগুলির উপর আক্রমণ করে, যা জ্বরের কারণ হতে পারে। যেমন:
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস: জয়েন্টে প্রদাহ।
লুপাস: বিভিন্ন অঙ্গের প্রদাহ।
ক্যান্সার
কিছু ধরনের ক্যান্সার শরীরে জ্বর সৃষ্টি করতে পারে। যেমন:
লিউকেমিয়া: রক্তের ক্যান্সার।
অন্যান্য কারণ
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জ্বর সৃষ্টি করতে পারে। যেমন:
অ্যান্টিবায়োটিক: বিশেষ ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক।
অ্যান্টি-সিজার ওষুধ: কিছু সিজার প্রতিরোধক ওষুধ।
আলো বা তাপ আঘাত: অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ায় শরীর তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে হিটস্ট্রোক হতে পারে, যা জ্বর সৃষ্টি করতে পারে।
প্রদাহ বা আঘাত: শরীরের কোনো অংশে প্রদাহ বা আঘাতজনিত কারণে জ্বর হতে পারে। যেমন:
শল্যচিকিৎসা: অপারেশনের পর জ্বর।
উপসংহার
জ্বর সাধারণত কোনো স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়। এর কারণ সঠিকভাবে নির্ধারণ করা জরুরি, কারণ তা সঠিক চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংক্রমণ, অটোইমিউন ডিসঅর্ডার, ক্যান্সার, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, আলো বা তাপ আঘাত এবং প্রদাহ বা আঘাত হতে পারে জ্বরের মূল কারণ। সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কারণ নির্ধারণ করা এবং চিকিৎসা গ্রহণ করা আবশ্যক।
Comments
Post a Comment