Skip to main content

বর্ষাকালে ত্বক উজ্জ্বল ও সুস্থ রাখার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

 


বর্ষাকালে ত্বকের যত্ন নেওয়া জরুরি, কারণ এই সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে যায় যা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে। বর্ষাকালে ত্বক উজ্জ্বল ও সুস্থ রাখার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
দেওয়া হলো:

ত্বক পরিষ্কার রাখা

বর্ষাকালে ত্বকের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দিনে দুইবার মাইল্ড ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা উচিত। ঘাম ও ধুলা জমে ত্বকের রোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের সংক্রমণ এড়াতে নিয়মিত মুখ ধোয়া উচিত।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার

বর্ষাকালে ত্বক সাধারণত আর্দ্র থাকে, তবে তা ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজনীয়তা কমায় না। বরং, এই সময়ে হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত যা ত্বককে আর্দ্র রাখবে এবং অতিরিক্ত তেল উৎপাদন বন্ধ করবে। অ্যালোভেরা বা হায়ালুরোনিক অ্যাসিডযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বক আর্দ্র ও মসৃণ থাকবে।

সানস্ক্রিন ব্যবহার

অনেকেই মনে করেন বর্ষাকালে সানস্ক্রিনের প্রয়োজন নেই। তবে এই ধারণা ভুল। বর্ষাকালে সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। অন্তত SPF ৩০ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।

এক্সফোলিয়েশন

ত্বক থেকে মৃত কোষ দূর করতে সপ্তাহে অন্তত একবার এক্সফোলিয়েট করা উচিত। তবে খুব বেশি ঘর্ষণ করলে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাই মৃদু এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করা উচিত। এটি ত্বককে সতেজ ও উজ্জ্বল করে।

পর্যাপ্ত পানি পান

বর্ষাকালে অনেকেই পানি পান কমিয়ে দেন, যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান না করলে ত্বক শুষ্ক ও নিস্তেজ হয়ে যায়। তাই প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। পানি ত্বককে ভেতর থেকে আর্দ্র রাখে ও টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

সুস্থ ত্বকের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত জরুরি। তাজা ফল, সবজি, বাদাম, এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া উচিত। ভাজা-পোড়া ও তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এগুলি ত্বকের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।

ব্যায়াম

নিয়মিত ব্যায়াম ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে। বর্ষাকালে ঘরে ব্যায়াম করা যেতে পারে। যোগব্যায়াম ও প্রণায়াম ত্বকের জন্য উপকারী হতে পারে।

ঘুম

প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা পর্যাপ্ত ঘুম ত্বককে সতেজ রাখে। ঘুমের সময় ত্বক নিজেকে মেরামত করে এবং নতুন কোষ উৎপাদন করে।

প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার

বর্ষাকালে ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে। মধু, টমেটো, দই, ও ওটমিলের মতো উপাদান ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এগুলি প্রাকৃতিকভাবে ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে ও উজ্জ্বল করে।

তেল নিয়ন্ত্রণ

বর্ষাকালে ত্বক তেলযুক্ত হয়ে যায়, তাই তেল নিয়ন্ত্রণ করতে মাটির তৈরি ফেসপ্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং ত্বককে মসৃণ রাখে।

এইসব পরামর্শ মেনে চললে বর্ষাকালে ত্বক থাকবে সুস্থ, উজ্জ্বল ও মসৃণ। ত্বকের সমস্যা এড়াতে নিয়মিত যত্ন নেওয়া জরুরি।

Comments

Popular posts from this blog

চোখের নিচে বালি রেখা দূর করার উপায়

  চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার সহজ পদ্ধতি চোখের নিচে কালো দাগ (Dark Circles) অনেকের জন্যই বিরক্তিকর সমস্যা হতে পারে। এটি সাধারণত ঘুমের অভাব, স্ট্রেস, পানির অভাব, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, বা বয়স বৃদ্ধির ফলে হয়ে থাকে। তবে কিছু ঘরোয়া উপায় ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চললে সহজেই এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। চোখের চারপাশের কালচে দাগ হওয়ার কারণ চোখের চারপাশের কালচে দাগ (Dark Circles) হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো—ঘুমের অভাব, মানসিক চাপ, বয়স বৃদ্ধিজনিত ত্বকের পরিবর্তন, পানিশূন্যতা, অ্যালার্জি, অতিরিক্ত সূর্যালোকের সংস্পর্শ, জেনেটিক কারণ ও অনিয়মিত জীবনযাপন। এছাড়া ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন এবং অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসও এই সমস্যার জন্য দায়ী হতে পারে। চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার সহজ পদ্ধতি: ১. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো দরকার। ঘুমের অভাবে চোখের চারপাশে রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়, যা কালো দাগ হয়। তাই রাতে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। ২. শসার ব্যবহার শসার রস প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ত্বককে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। চোখের ব্যবহার করলে অনেকটা কালো দাগ কমবে। ক...

ত্বকের কালো দাগ দূর করার উপায়

  ত্বকের কালো দাগ দূর করার সহজ ও কার্যকর উপায় Pimple  ত্বকের কালো দাগ অনেকের জন্যই চিন্তার কারণ হতে পারে। ব্রণ, সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি, হরমোনজনিত পরিবর্তন, বা ত্বকের আঘাতের কারণে এসব দাগ দেখা দিতে পারে। তবে কিছু কার্যকর ঘরোয়া উপায় ও চিকিৎসার মাধ্যমে  ত্বকের কালো দাগ দূর করা সম্ভব। চলুন দেখে নেওয়া যাক কিছু উপকারী উপায়— ১. লেবুর রস ও মধু ব্যবহার করুন লেবুর রসে থাকা প্রাকৃতিক ব্লিচিং উপাদান ত্বকের দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। লেবুর রসের সঙ্গে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে দাগের উপর লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। তবে সংবেদনশীল ত্বকে লেবুর রস সরাসরি ব্যবহার না করাই ভালো। ২. অ্যালোভেরা জেলের ব্যবহার অ্যালোভেরা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ত্বকের দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকে তাজা অ্যালোভেরা জেল লাগান এবং সকালে ধুয়ে ফেলুন। ৩. কাঁচা হলুদের প্যাক ব্যবহার করুন Tarmaric powder  হলুদে থাকা কিউমারিন যৌগ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। এক চা-চামচ কা...

সরিষার তেলের গোপন তথ্য / sorisa teler karjokarita

  সরিষার তেল আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা শুধু রান্নার কাজেই নয়, বরং শারীরিক যত্নেও বহুল ব্যবহৃত। বিশেষ করে নাভিতে সরিষার তেল দেওয়ার বিষয়টি আমাদের লোকজ চিকিৎসা ও আর্বুদ চর্চায় দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত। এর পেছনে বৈজ্ঞানিক এবং ঐতিহ্যগত কারণও রয়েছে। চলুন, জেনে নিই নাভিতে সরিষার তেল দেওয়ার উপকারিতা ও সম্ভাব্য প্রভাব। ১. ত্বকের যত্নে সহায়তা নাভি শরীরের একটি কেন্দ্রীয় স্থান, যা ত্বকের তেল নিঃসরণে ভূমিকা রাখে। সরিষার তেলে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান রয়েছে, যা নাভির চারপাশে ত্বকের সংক্রমণ রোধে কার্যকর। এটি ত্বককে মসৃণ এবং কোমল রাখতেও সাহায্য করে। ২. হজম শক্তি উন্নত করে (sorisa) নাভিতে সরিষার তেল ব্যবহার করলে হজম প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুসারে, নাভির মাধ্যমে তেলের উপাদান শরীরে প্রবেশ করে হজমের কার্যক্রম উন্নত করতে পারে। এটি গ্যাস, পেট ফাঁপা এবং বদহজম দূর করতে সাহায্য করে। ৩. হরমোনাল ভারসাম্য বজায় রাখা নাভিকে শরীরের কেন্দ্রীয় নার্ভ সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হয়। সরিষার তেলের মতো প্রাকৃতিক তেল নাভিতে দিলে ...