সৌন্দর্য মানুষের চিরন্তন আকাঙ্ক্ষা। সৌন্দর্য মানেই শুধু বাহ্যিক রূপ নয়; বরং শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক দিক মিলেই প্রকৃত সৌন্দর্য গড়ে ওঠে। সৌন্দর্য ধরে রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি, আবার কিছু অভ্যাস অবশ্যই এড়িয়ে চলা দরকার।
প্রথমত, পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা উচিত। প্রতিদিন গোসল করা, মুখ-হাত পরিষ্কার রাখা, নখ ও চুল পরিচর্যা করা—এসব ছোটখাটো অভ্যাস সৌন্দর্যকে দীর্ঘস্থায়ী করে। একটি সতেজ মুখ আর পরিচ্ছন্ন দেহ-পরিচ্ছদ মানুষকে সহজেই আকর্ষণীয় করে তোলে।
দ্বিতীয়ত, সুষম খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। ভিটামিন, খনিজ ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার শরীর ও ত্বকের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বেশি তেল-ঝাল, ফাস্টফুড বা অতিরিক্ত মিষ্টি এড়িয়ে ফলমূল, শাকসবজি ও প্রচুর পানি খাওয়া সৌন্দর্য রক্ষার অন্যতম উপায়।
তৃতীয়ত, ঘুম ও বিশ্রাম যথেষ্ট নেওয়া উচিত। অনিদ্রা বা অতিরিক্ত কাজের চাপে শরীর ক্লান্ত ও বিবর্ণ হয়ে পড়ে। প্রতিদিন ৬-৮ ঘণ্টা ঘুম ত্বককে উজ্জ্বল রাখে এবং মানসিক প্রশান্তি আনে।
চতুর্থত, ব্যায়াম করা উচিত। নিয়মিত হাঁটা, যোগব্যায়াম বা হালকা ব্যায়াম শরীরে রক্তসঞ্চালন বাড়ায়, ত্বকে উজ্জ্বলতা আনে এবং শরীরকে আকৃতিবান করে তোলে।
পঞ্চমত, মানসিক সৌন্দর্য গড়ে তোলা উচিত। শুধু বাহ্যিক রূপে সৌন্দর্য টেকে না, আচরণে সৌন্দর্য বেশি প্রভাব ফেলে। কোমল ভাষা, সহানুভূতি, সততা ও হাসিমুখ মানুষকে ভেতর থেকে সুন্দর করে তোলে।
অন্যদিকে, সৌন্দর্য নষ্ট করার মতো কিছু অভ্যাস আছে যা এড়িয়ে চলা উচিত।
প্রথমত, অতিরিক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করা উচিত নয়। কৃত্রিম রূপচর্চা সাময়িক সৌন্দর্য দিলেও দীর্ঘমেয়াদে তা ত্বকের ক্ষতি করে।
দ্বিতীয়ত, ধূমপান, মদ্যপান ও নেশা করা উচিত নয়। এসব অভ্যাস শরীরের ভেতর থেকে ক্ষতি করে, দাঁত, ত্বক ও চোখের জৌলুস নষ্ট করে দেয়।
তৃতীয়ত, অপরিষ্কার জীবনযাপন এড়ানো উচিত। অপরিষ্কার পোশাক, ঘর-আশপাশে নোংরা পরিবেশ সৌন্দর্যের শত্রু।
চতুর্থত, অতিরিক্ত মানসিক চাপ নেওয়া উচিত নয়। দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ মানুষের চেহারায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। শান্ত ও ইতিবাচক মনোভাব সৌন্দর্যকে দীর্ঘস্থায়ী করে।
সবশেষে বলা যায়, সৌন্দর্য ধরে রাখতে হলে আমাদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, পরিচ্ছন্নতা ও মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখতে হবে। আর এড়িয়ে চলতে হবে কৃত্রিমতা, অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ও নেতিবাচক মানসিকতা। সত্যিকার সৌন্দর্য হলো সেই সৌন্দর্য, যা ভেতর থেকে বাইরে ছড়িয়ে পড়ে।
Comments
Post a Comment