Skip to main content

​পার্সিমন (Persimmon) ফলের পুষ্টিগুণ

 

Persimmon

ফল (Persimmon) মূলত একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। তবে এটি শরতের শেষের দিকে এবং শীতকালে পাওয়া যায়। ফলটি দেখতে অনেকটা টমেটোর মতো, কমলা বা লাল রঙের হয়ে থাকে। জাপানি ভাষায় এটিকে বলা হয় 'কাকি' (Kaki)। এই ফলটি যেমন সুস্বাদু, তেমনি এর অনেক ঔষধি গুণও রয়েছে।

​পার্সিমন ফলের পুষ্টিগুণ

পার্সিমন একটি পুষ্টিকর ফল, এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি রয়েছে। এছাড়াও এতে ম্যাঙ্গানিজ, ফাইবার, বিটা-ক্যারোটিন এবং অন্যান্য উপকারী উপাদান রয়েছে। পার্সিমনে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যেমন ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ট্যানিন।

​পার্সিমন ফলের উপকারিতা

  • দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে: পার্সিমনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে বিটা-ক্যারোটিনও রয়েছে, যা রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: পার্সিমনে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: পার্সিমনে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ট্যানিন, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এই উপাদানগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।
  • হজমশক্তি উন্নত করে: পার্সিমনে ফাইবার রয়েছে, যা হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
  • ওজন কমাতে সাহায্য করে: পার্সিমনে ফাইবার এবং জলীয় উপাদান রয়েছে, যা পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। এটি অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে সাহায্য করে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: পার্সিমনে রয়েছে এক ধরনের ডায়েটারি ফাইবার, যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে: পার্সিমনে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কোষের ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধ করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

​কিভাবে পার্সিমন ফল খাবেন?

পার্সিমন ফল তাজা খাওয়া যায়। এটি জুস, জ্যাম বা ডেজার্ট তৈরিতেও ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও, পার্সিমন শুকিয়ে খাওয়াও খুবই জনপ্রিয়। শুকনো পার্সিমন দেখতে অনেকটা শুকনো খেজুরের মতো, তবে এটি আরও মিষ্টি এবং চটচটে।

​সতর্কতা

​যাদের কিডনি রোগ আছে, তাদের পার্সিমন ফল খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়াও, অতিরিক্ত পরিমাণে পার্সিমন ফল খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে।

সারাংশ

পার্সিমন ফল একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল। এটি দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে, হজমশক্তি উন্নত করতে, ওজন কমাতে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই ফলটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী

Comments

Popular posts from this blog

চোখের নিচে বালি রেখা দূর করার উপায়

  চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার সহজ পদ্ধতি চোখের নিচে কালো দাগ (Dark Circles) অনেকের জন্যই বিরক্তিকর সমস্যা হতে পারে। এটি সাধারণত ঘুমের অভাব, স্ট্রেস, পানির অভাব, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, বা বয়স বৃদ্ধির ফলে হয়ে থাকে। তবে কিছু ঘরোয়া উপায় ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চললে সহজেই এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। চোখের চারপাশের কালচে দাগ হওয়ার কারণ চোখের চারপাশের কালচে দাগ (Dark Circles) হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো—ঘুমের অভাব, মানসিক চাপ, বয়স বৃদ্ধিজনিত ত্বকের পরিবর্তন, পানিশূন্যতা, অ্যালার্জি, অতিরিক্ত সূর্যালোকের সংস্পর্শ, জেনেটিক কারণ ও অনিয়মিত জীবনযাপন। এছাড়া ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন এবং অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসও এই সমস্যার জন্য দায়ী হতে পারে। চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার সহজ পদ্ধতি: ১. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো দরকার। ঘুমের অভাবে চোখের চারপাশে রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়, যা কালো দাগ হয়। তাই রাতে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। ২. শসার ব্যবহার শসার রস প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ত্বককে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। চোখের ব্যবহার করলে অনেকটা কালো দাগ কমবে। ক...

ত্বকের কালো দাগ দূর করার উপায়

  ত্বকের কালো দাগ দূর করার সহজ ও কার্যকর উপায় Pimple  ত্বকের কালো দাগ অনেকের জন্যই চিন্তার কারণ হতে পারে। ব্রণ, সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি, হরমোনজনিত পরিবর্তন, বা ত্বকের আঘাতের কারণে এসব দাগ দেখা দিতে পারে। তবে কিছু কার্যকর ঘরোয়া উপায় ও চিকিৎসার মাধ্যমে  ত্বকের কালো দাগ দূর করা সম্ভব। চলুন দেখে নেওয়া যাক কিছু উপকারী উপায়— ১. লেবুর রস ও মধু ব্যবহার করুন লেবুর রসে থাকা প্রাকৃতিক ব্লিচিং উপাদান ত্বকের দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। লেবুর রসের সঙ্গে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে দাগের উপর লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। তবে সংবেদনশীল ত্বকে লেবুর রস সরাসরি ব্যবহার না করাই ভালো। ২. অ্যালোভেরা জেলের ব্যবহার অ্যালোভেরা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ত্বকের দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকে তাজা অ্যালোভেরা জেল লাগান এবং সকালে ধুয়ে ফেলুন। ৩. কাঁচা হলুদের প্যাক ব্যবহার করুন Tarmaric powder  হলুদে থাকা কিউমারিন যৌগ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। এক চা-চামচ কা...

সরিষার তেলের গোপন তথ্য / sorisa teler karjokarita

  সরিষার তেল আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা শুধু রান্নার কাজেই নয়, বরং শারীরিক যত্নেও বহুল ব্যবহৃত। বিশেষ করে নাভিতে সরিষার তেল দেওয়ার বিষয়টি আমাদের লোকজ চিকিৎসা ও আর্বুদ চর্চায় দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত। এর পেছনে বৈজ্ঞানিক এবং ঐতিহ্যগত কারণও রয়েছে। চলুন, জেনে নিই নাভিতে সরিষার তেল দেওয়ার উপকারিতা ও সম্ভাব্য প্রভাব। ১. ত্বকের যত্নে সহায়তা নাভি শরীরের একটি কেন্দ্রীয় স্থান, যা ত্বকের তেল নিঃসরণে ভূমিকা রাখে। সরিষার তেলে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান রয়েছে, যা নাভির চারপাশে ত্বকের সংক্রমণ রোধে কার্যকর। এটি ত্বককে মসৃণ এবং কোমল রাখতেও সাহায্য করে। ২. হজম শক্তি উন্নত করে (sorisa) নাভিতে সরিষার তেল ব্যবহার করলে হজম প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুসারে, নাভির মাধ্যমে তেলের উপাদান শরীরে প্রবেশ করে হজমের কার্যক্রম উন্নত করতে পারে। এটি গ্যাস, পেট ফাঁপা এবং বদহজম দূর করতে সাহায্য করে। ৩. হরমোনাল ভারসাম্য বজায় রাখা নাভিকে শরীরের কেন্দ্রীয় নার্ভ সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হয়। সরিষার তেলের মতো প্রাকৃতিক তেল নাভিতে দিলে ...