Skip to main content

কেন প্রতিদিন পেয়ারা খাবেন ?

 

বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ও সহজলভ্য ফল হলো পেয়ারা। গ্রামীণ হাটবাজার থেকে শুরু করে শহরের প্রতিটি ফলের দোকানে সারা বছরই এর দেখা মেলে। দামেও সাশ্রয়ী, স্বাদেও অনন্য, আর পুষ্টিগুণেও ভরপুর এই ফলটি আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চলুন জেনে নিই কেন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পেয়ারা রাখা উচিত।


পেয়ারায় কী কী উপাদান আছে


পেয়ারাকে বলা হয় “গরিবের আপেল”। কারণ অল্প দামে এটি অসাধারণ পুষ্টি সরবরাহ করে।


ভিটামিন সি: একটি মাঝারি আকারের পেয়ারায় কমলালেবুর চেয়েও প্রায় ৪ গুণ বেশি ভিটামিন সি থাকে।


ভিটামিন এ: চোখের জন্য অত্যন্ত কার্যকর ভিটামিন এ-ও পেয়ারায় পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে।


আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস: হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে।


ফাইবার (আঁশ): হজম শক্তি বাড়াতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকর।


অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।


ক্যালোরি কম: ১০০ গ্রাম পেয়ারায় প্রায় ৫০ ক্যালোরি থাকে, তাই ডায়াবেটিক ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যক্তিদের জন্য আদর্শ ফল।



পেয়ারার উপকারিতা


১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

পেয়ারার ভিটামিন সি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত খেলে সর্দি-কাশি ও মৌসুমি সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।


২. চোখের জন্য উপকারী

ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে এবং ছানি বা রাতকানা রোগের ঝুঁকি কমায়।


৩. হজমে সহায়ক

পেয়ারার ফাইবার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন, তাদের জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পেয়ারা খুব উপকারী।


৪. হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে

পেয়ারার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও আঁশ রক্তে কোলেস্টেরল কমায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ফলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।


৫. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে

পেয়ারার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ। নিয়মিত পেয়ারা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।


৬. ওজন কমাতে সহায়ক

কম ক্যালোরি ও বেশি আঁশ থাকায় পেয়ারা দ্রুত পেট ভরায়, ফলে অতিরিক্ত খাওয়া কমে যায়। তাই যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাদের জন্য এটি আদর্শ ফল।


৭. ত্বক ও চুলের যত্নে কার্যকর

ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে উজ্জ্বল রাখে, বলিরেখা দেরিতে আসতে সাহায্য করে এবং চুলের গোড়া মজবুত করে।


৮. হাড় ও দাঁতের জন্য ভালো

পেয়ারার ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও অন্যান্য খনিজ উপাদান হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে সাহায্য করে।


উপসংহার


পেয়ারা শুধু সুস্বাদুই নয়, বরং ভিটামিন, খনিজ ও আঁশসমৃদ্ধ একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যকর ফল। এটি খাওয়া যায় কাঁচা, পাকা, জুস বা সালাদ আকারে। শিশু থেকে বৃদ্ধ—সবার জন্যই পেয়ারা একটি আদর্শ ফল। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পেয়ারা রাখুন, সুস্থ থাকুন।

Comments

Popular posts from this blog

চোখের নিচে বালি রেখা দূর করার উপায়

  চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার সহজ পদ্ধতি চোখের নিচে কালো দাগ (Dark Circles) অনেকের জন্যই বিরক্তিকর সমস্যা হতে পারে। এটি সাধারণত ঘুমের অভাব, স্ট্রেস, পানির অভাব, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, বা বয়স বৃদ্ধির ফলে হয়ে থাকে। তবে কিছু ঘরোয়া উপায় ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চললে সহজেই এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। চোখের চারপাশের কালচে দাগ হওয়ার কারণ চোখের চারপাশের কালচে দাগ (Dark Circles) হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো—ঘুমের অভাব, মানসিক চাপ, বয়স বৃদ্ধিজনিত ত্বকের পরিবর্তন, পানিশূন্যতা, অ্যালার্জি, অতিরিক্ত সূর্যালোকের সংস্পর্শ, জেনেটিক কারণ ও অনিয়মিত জীবনযাপন। এছাড়া ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন এবং অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসও এই সমস্যার জন্য দায়ী হতে পারে। চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার সহজ পদ্ধতি: ১. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো দরকার। ঘুমের অভাবে চোখের চারপাশে রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়, যা কালো দাগ হয়। তাই রাতে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। ২. শসার ব্যবহার শসার রস প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ত্বককে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। চোখের ব্যবহার করলে অনেকটা কালো দাগ কমবে। ক...

ত্বকের কালো দাগ দূর করার উপায়

  ত্বকের কালো দাগ দূর করার সহজ ও কার্যকর উপায় Pimple  ত্বকের কালো দাগ অনেকের জন্যই চিন্তার কারণ হতে পারে। ব্রণ, সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি, হরমোনজনিত পরিবর্তন, বা ত্বকের আঘাতের কারণে এসব দাগ দেখা দিতে পারে। তবে কিছু কার্যকর ঘরোয়া উপায় ও চিকিৎসার মাধ্যমে  ত্বকের কালো দাগ দূর করা সম্ভব। চলুন দেখে নেওয়া যাক কিছু উপকারী উপায়— ১. লেবুর রস ও মধু ব্যবহার করুন লেবুর রসে থাকা প্রাকৃতিক ব্লিচিং উপাদান ত্বকের দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। লেবুর রসের সঙ্গে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে দাগের উপর লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। তবে সংবেদনশীল ত্বকে লেবুর রস সরাসরি ব্যবহার না করাই ভালো। ২. অ্যালোভেরা জেলের ব্যবহার অ্যালোভেরা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ত্বকের দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকে তাজা অ্যালোভেরা জেল লাগান এবং সকালে ধুয়ে ফেলুন। ৩. কাঁচা হলুদের প্যাক ব্যবহার করুন Tarmaric powder  হলুদে থাকা কিউমারিন যৌগ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। এক চা-চামচ কা...

সরিষার তেলের গোপন তথ্য / sorisa teler karjokarita

  সরিষার তেল আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা শুধু রান্নার কাজেই নয়, বরং শারীরিক যত্নেও বহুল ব্যবহৃত। বিশেষ করে নাভিতে সরিষার তেল দেওয়ার বিষয়টি আমাদের লোকজ চিকিৎসা ও আর্বুদ চর্চায় দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত। এর পেছনে বৈজ্ঞানিক এবং ঐতিহ্যগত কারণও রয়েছে। চলুন, জেনে নিই নাভিতে সরিষার তেল দেওয়ার উপকারিতা ও সম্ভাব্য প্রভাব। ১. ত্বকের যত্নে সহায়তা নাভি শরীরের একটি কেন্দ্রীয় স্থান, যা ত্বকের তেল নিঃসরণে ভূমিকা রাখে। সরিষার তেলে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান রয়েছে, যা নাভির চারপাশে ত্বকের সংক্রমণ রোধে কার্যকর। এটি ত্বককে মসৃণ এবং কোমল রাখতেও সাহায্য করে। ২. হজম শক্তি উন্নত করে (sorisa) নাভিতে সরিষার তেল ব্যবহার করলে হজম প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুসারে, নাভির মাধ্যমে তেলের উপাদান শরীরে প্রবেশ করে হজমের কার্যক্রম উন্নত করতে পারে। এটি গ্যাস, পেট ফাঁপা এবং বদহজম দূর করতে সাহায্য করে। ৩. হরমোনাল ভারসাম্য বজায় রাখা নাভিকে শরীরের কেন্দ্রীয় নার্ভ সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হয়। সরিষার তেলের মতো প্রাকৃতিক তেল নাভিতে দিলে ...